শুল্ক পরিশোধ না করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কনটেইনার পাচারের চেষ্টা

 প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১২:০৬ অপরাহ্ন   |   জেলার খবর

শুল্ক পরিশোধ না করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কনটেইনার পাচারের চেষ্টা
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) থেকে জাল ডেলিভারি চালান ব্যবহার করে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে একটি আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার পাচারকালে বন্দর নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হয়। এ ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষ তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। আটককৃতদের - ১ জন ট্রেইলার ড্রাইভার ও ২ এনসিটির সদ্য সাবেক অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেকের কর্মচারী। এ ঘটনায় গেট সার্জেন্ট উৎপল ধর বাদী হয়ে বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বুধবার (৯ জুলাই) রাত সাড়ে ১২টা১৫ মিনিটের দিকে চট্ট-মেট্রো-ঢ-৮১- ০৫৫০ নম্বরের ট্রেইলারটি বারিক বিল্ডিং ১ নম্বর গেট দিয়ে ১টি কন্টেইনার ( সি এ এ ইউ ৮৭৮৮৯৬৩X৪০) বাহির হওয়ার চেষ্টা করে । ট্রেইলার ড্রাইভার দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহরের সল্টগোলা ক্রসিং এলাকার বাসিন্দা মো. দুলাল, যিনি মামলার ২ নম্বর আসামি। তিনি যে ডেলিভারি চালান দেখান, তা যাচাই করে নিরাপত্তা টিম সেটিকে জাল বলে শনাক্ত করে, কারণ সেটির সঙ্গে রেজিস্টার ও মূল নথির কোনো মিল ছিল না। পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত গেট সার্জেন্ট মো. মওদুদ আহমেদ ডেলিভারি চালানে থাকা স্বাক্ষরটি জাল বলে নিশ্চিত করেন। এরপর চালক মো. দুলালকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, 'এম হক এন্টারপ্রাইজ'-এর জেটি সরকার মো. রহিম (১ নম্বর আসামি) তাকে জাল ডকুমেন্ট সরবরাহ করেন এবং কনটেইনার খালাসের পুরো প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেন। এদিকে মামলার ৩ ও ৪ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান হৃদয় (২৪) ও সৈয়দ মিজানুর রহমান (৪৮) দুজনেই এন-সিটি ইয়ার্ডে সাইফ পাওয়ারটেকের অধীনে বার্থ অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তারা রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি (আরটিজি) ক্রেন ব্যবহার করে যাচাই না করেই কনটেইনারটি দুলালের ট্রেইলারে তুলে দেন। বন্দরের নিরাপত্তা টিম কনটেইনার, ট্রইলার এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আটক করে বন্দর থানায় হস্তান্তর করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেন, পরস্পর যোগসাজশে জাল কাগজপত্র তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে কনটেইনারটি খালাসের চেষ্টা করেছিলেন। কনটেইনারটি এখনো কাস্টমস কর্তৃক শুল্কায়ন হয়নি, ফলে এর ভিতরে কী রয়েছে তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। বর্তমানে কনটেইনার ও ট্রেইলারটি বন্দরের নিরাপত্তা টিমের হেফাজতে রয়েছে। তবে জাল কাগজ তৈরির মূল হোতা সিএন্ডএফ এজেন্ট 'এম হক এন্টারপ্রাইজ'-এর জেটি সরকার মো. রহিম এখনও পলাতক। তিনি মামলার ১ নম্বর আসামি। নগরীর বারিক বিল্ডিং স্ট্যান্ড রোডের সাবের প্লাজায় এম হক এন্টারপ্রাইজের (লাইসেন্স নম্বর ৩৭৯৯/১৩) কার্যালয়। বন্দর থানার ওসি কাজী মুহাম্মদ সুলতান আহসান জানান, জালিয়াতির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃ তদের মধ্যে দুইজন সাইফ পাওয়ারটেকের কর্মচারী এবং অপরজন একটি ট্রেইলার চালক। বন্দর সূত্র জানায়, সম্প্রতি নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব সাইফ পাওয়ারটেকের কাছ থেকে নৌবাহিনীর অধীন ড্রাইডকের কাছে হস্তান্তর করা হলেও, এখনো প্রায় সব দায়িত্বেই সাইফ পাওয়ারটেকের লোকজন রয়েছেন।

জেলার খবর এর আরও খবর: