মে দিবসে শ্রমিক অসুস্থ বায়ানের পাশে তথ্যমন্ত্রী

 প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৩, ০১:০৩ অপরাহ্ন   |   চিকিৎসা

মে দিবসে শ্রমিক অসুস্থ বায়ানের পাশে তথ্যমন্ত্রী


মুবিন বিন সোলাইমান (চট্টগ্রাম) :

"পহেলা মে" আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। শ্রমিক দিবসে অনেকেই পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, স্ট্যাটাস, সভা-সমাবেশ, শোভাযাত্রা, সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মধ্যে আবদ্ধ থাকলেও তথ্যমন্ত্রী হাঁটছেন অন্য পথে। বিল্ডিং কনস্ট্রাকশনের কাজ করতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মেরুদন্ড ভেঙে যাওয়া শ্রমিক আবুল বয়ানের পাশে দাঁড়িয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ডঃ হাছান মাহমুদ।


এ যেন মে দিবসের পরিপূর্ণ সংজ্ঞা ও উদ্দেশ্য। আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবন-মান উন্নয়ন, জরুরি চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে ইতোমধ্যে।


তারই ধারাবাহিকতায় গত ২রা মে নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রাম ৭ আসনের এমপি রাঙ্গুনিয়ার কৃতি সন্তান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ডক্টর হাছান মাহমুদ এমপি এর ঢাকা মিন্টু রোডস্থ সরকারি বাসভবনে শ্রমিক যুবনেতা আবুল বয়ানের উন্নত চিকিৎসা সহায়তার জন্য নিয়ে যায় একই ইউনিয়নের মানবিক যুবলীগ নেতা রাইসুল সেলিম ইমন (৩০)। আবুল বয়ানের শারীরিক অবস্থা দেখে নগদ অর্থ সহায়তাসহ ঢাকাস্থ শেরেবাংলা নগর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ নিউরো সাইন্স এন্ড হাসপাতালের সিও ডাক্তার বদরুল আলম'কে ফোন করে ভর্তি করতে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সুপারিশ করে তথ্যমন্ত্রী। এছাড়াও পরবর্তীতে আরো আর্থিক সহায়তা করতে আশ্বস্ত করেন।


রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সরফভাটা ইউনিয়ন ৪নং ওয়ার্ডে হাজী সমীর উদ্দিন সওদাগরের বাড়ির হতদরিদ্র নুরুল ইসলামের ৪ ছেলে ৫ মেয়ের মধ্যে ৪র্থ সন্তান মোঃ আবুল বায়ান (৩৫) একই উপজেলার পোমরা ইউনিয়নে বিল্ডিং কনস্ট্রাকশনের কাজ করতে গিয়ে বিল্ডিং এর ছাদ থেকে পড়ে মেরুদন্ড ভেঙে যায়। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পরে কিছুটা সুস্থ হলে গত ৪ মাস আগে হঠাৎ দুই পায়ের নার্ভে ব্লাড সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেলে পায়ের হাড়ের সাথে চামড়া একাকার হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় হাঁটাচলা, সেই সাথে বন্ধ হয়ে যায় পরিবারের ইনকামের চাকা। দীর্ঘ চার মাস বিছানার সাথে সম্পর্ক হয়ে যায় শ্রমিক যুবলীগ নেতা বয়ানের। ডাক্তারদের পরামর্শ অপারেশন করাতে হবে, প্রায় ১০ লক্ষ টাকা মতো খরচ হতে পারে, এতে অসহায় দরিদ্র বয়ান হাল ছেড়ে দিয়ে জীবনের প্রতি মায়াটান ইতি টানতে প্রস্তুত হয়, বাধ্য হয়ে মৃত্যুর প্রহর গোনতে শুরু করে প্রতিটি ক্ষণ।


পরে বেঁচে থাকার আকুতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার দেওয়া স্ট্যাটাস স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা ও বিত্তবানদের দৃষ্টিগোচর হয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা তাকে আর্থিক সহায়তা করে এবং তার দেওয়া স্ট্যাটাসটি শেয়ার করতে থাকে। পরে স্টাটাসটি দৃষ্টিগোচর হয় তথ্যমন্ত্রীর।


উল্লেখ্য, ২ ছেলে ১ মেয়ের জনক মোঃ আবুল বায়ান সরফভাটা ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্বরত আছে, দলীয় যে কোন মিছিল-মিটিংয়ে সবার অগ্রভাগে তাকে পাওয়া যায়। ইনকামের একমাত্র মাধ্যম সিএনজি চালিত অটোরিকশা।


এ বিষয়ে আবুল বয়ানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, উপজেলার পোমরা ইউনিয়নে বিল্ডিং কন্সট্রাকশনের কাজ করতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মেরুদন্ড ভেঙে গেলে দীর্ঘদিন চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়িতে আসি, শ্রমিকের কাজ করতে অক্ষম বিধায় আমার মেজ ভাই অনেক কষ্টের বিনিময়ে আমাকে একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা কিনে দেয়, এই অটো রিক্সাটি ছিল পরিবারের ইনকামের একমাত্র উৎস, অটোরিকশা চালিয়ে পরিবার ও রাজনীতির জন্য নিবেদিত ছিলাম যে কোন মিছিল-মিটিংয়ে সবার আগে উপস্থিত ছিলাম। হঠাৎ গত চার মাস আগে আমি অনুভব করি কোমর থেকে যেন আমার দুটি পা আলাদা হয়ে যাচ্ছে। পরে ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার নার্ভে রক্ত সঞ্চালনা বন্ধ হয়েছে বলে জানান। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিলে স্থানীয় বিভিন্ন নেতৃবৃন্দরা সহযোগিতায় এগিয়ে আসে এবং মন্ত্রী মহোদয় আমাকে ফোন দিয়ে আর্থিক ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার আশ্বস্ত করেন। ঢাকায় যাওয়ার পর মন্ত্রী মহোদয় থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত আমাকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছিল আমাদের সরফভাটার মানবিক যুবনেতা খ্যাত যুবলীগের সহ-সভাপতি রাইসুল সেলিম ইমন ভাই। তার চাকরি থাকার পরও আমার জন্য ছুটি নিয়েছে এবং আমার সাথে সার্বিক সহযোগিতায় অতিবাহিত করছে, আমাকে বিভিন্ন ছলা-পরামর্শ দিয়ে এখনোঅব্দি সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছে। আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি মনোনীত তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি মহোদয়ের প্রতি, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি রাঙ্গুনিয়া আওয়ামী পরিবারের নেতৃবৃন্দ প্রতি। বিশেষ করে আব্দুর রউফ স্যার, আহসান হাবীব, নিজামুদ্দিন বাদশা, শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, মুজিব সরফি, মোঃ ইউনুচ, আবু তাহের, মোঃ হাসান মুরাদ, রাইসুল সেলিম ইমন, মুবিনসহ আরো অনেকেই এই মুহূর্তে যাদের নাম স্মরণ করতে পারছি না।


চিকিৎসা এর আরও খবর: