মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জে মনিপুরীদের ১৮০তম মহা রাসলীলা উৎসব
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২২, ০৭:১৪ অপরাহ্ন | ভিন্ন খবর
সৈয়দ মহসীন পারভেজ (মৌলভীবাজার) :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মনিপুরী সম্প্রদায়ের ১৮০তম মহারাসলীলা উৎসব চলছে। হৈ-চৈ, ঢাক-ঢোল, করতাল আর শংখ ধ্বনির মধ্যদিয়ে শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার জীবনকে নিয়ে চলে রাখাল নৃত্য। মনিপুরি অধ্যুসিত এলাকা মাধবপুরে ৩টি মন্ডপে মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া উৎসব বুধবার ভোরে সমাপ্তি হয়।
প্রতি বছরের ন্যায় পূর্ণিমার চাঁদের সাথে মিল রেখে রাস পূর্ণিমা বা রাস উৎসব পালন হচ্ছে। কমলগঞ্জের মাধবপুর এলাকায় ৩টি ম-পে রাধা কৃষ্ণের প্রেম লীলার মহা উপখ্যায় মঞ্চায়িত হয়েছে মণিপুরী সম্প্রদায়ের রাস উৎসব। রাস উৎসবের সূচনা হয় মঙ্গলবার সকালে। ধর্মীয় লগ্ন হিসেব মতে দূপুর দেড়টার পর ৩টি মন্ডপে রাখাল নৃত্যের মধ্যদিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে ৫ বছরের অধিক বয়সী কিশোর রাখাল সেজে সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত পৃথক ৩ টি কদম গাছের নীচে বাদ্যের তালে তালে বাঁশী নিয়ে নাচে।
বছরে একবার মনিপুরী সম্প্রদায়ের লোকজন ধর্মীয় উৎসব পালন করে থাকেন। পাশাপাশি উৎসব উপলক্ষে আত্মীয় স্বজনের সাথেও তারা পরস্পর মিলিত হন। মনিপুরী সম্প্রদায় ছাড়াও এ অনুষ্ঠাণ উপভোগ করতে দেশী বিদেশী পর্যটক আসেন।
প্রতি বছরের ন্যায় সন্ধ্যায় আলোচনা সভা ও গুনীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান রয়েছে। আয়োজকরা বলেন, এবছর করোনার পর স্বাবাবিক হওয়ায় জনসমাগম অনেক বেশী হয়েছে। সকল ধর্মের মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবস্থল মিলন মেলায় রুপ নেয়।
রাসলীলায় মঞ্চস্থ মণিপুরী নৃত্য শুধু কমলগঞ্জের নয়, গোটা ভারতীয় উপমহাদেশ সহ সমগ্র বিশ্বের নৃত্য কলার মধ্যে একটি বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছে।
সব শেষে মধ্যরাতে পৃথক তিনটি-মন্ডপে উৎসবের আরেকটি অংশ রাসলীলা শুরু হবে। কিশোরী মেয়েকে কৃষ্ণের প্রিয়সী সাজিয়ে নাচতে থাকবে, এরপর অপর কিশোরকে শ্রীকৃষ্ণ সেঁজে বাঁশি হাতে নিয়ে নাচবে। পরে রাধাকে নিয়ে একঝাঁক গোপিনীরা একত্রে নাচতে আনবে মন্ডপের ভেতর। মধ্যরাতে লোকে লোকারন্য হয়ে যায় মন্ডব প্রাঙ্গন। এ ভাবে সাড়ারাত নৃত্যের মাধ্যমে রাধা ও কৃষ্ণের মিলন ঘটানোর মাধ্যমে বুধবার সূর্যোদয়ের পর উৎসবের সমাপ্তি ঘটে।

