ভর্তি পরীক্ষাকালীন সময়ে টিএসসিতে রমরমা কোচিং বাণিজ্য, সাংবাদিক হেনস্তার শিকার
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩, ০৩:০৭ অপরাহ্ন | শিক্ষা

মাহমুদুল হাসান (জাবি প্রতিনিধি) :
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষ স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অনুমোদন ছাড়াই কেন্দ্রের ভেতরেই চলছে কোচিং বাণিজ্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ঘুরে দেখা যায়, সি-১ ইউনিটভুক্ত নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের এবং চারুকলা বিভাগের প্রাথমিক (এমসিকিউ) পরীক্ষায় উত্তীর্ণের পর ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা কোচিং বাণিজ্য করছেন।
কোচিং এর ক্লাসের জন্য তারা জায়গা হিসেবে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রকে ব্যবহার করার ফলে স্বভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক চলাফেরাসহ টিএসসি কেন্দ্রীক কার্যক্রম করতে পারছে না।
মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুর একটায় কোচিং চলাকালীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি মোসাদ্দেকুর রহমান জাবি প্রেসক্লাব কক্ষের সামনপ সাইকেল রাখতে গেলে কোচিং এর সাথে সংশ্লিষ্ট চারুকলা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুহতাসিন বিল্লাহ তাকে সাইকেল সরাতে বলেন এবং বলেন এখানে আমরা কোচিং করাবো। মোসাদ্দেকুর রহমান সাইকেল সরাতে রাজি না হলে তার উপর চড়াও হয়, একপর্যায়ে তাকে ধাক্কা দেয় এবং হুমকি দেয়।
ভুক্তভোগী মোসাদ্দেকুর রহমান বলেন, ২০ জানুয়ারি, মঙ্গলবার দুপুর ০১ টার সময় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে প্রেসক্লাব কক্ষের (কক্ষ নং ৪) সামনে আমার সাইকেল রাখতে গেলে মিঠুন চারুকলা ৪৮ (আলবেরুনী হল), মুহতাসিম বিল্লাহ চারুকলা ৪৮ (বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল) সহ আরও ৩-৪ জন আমাকে সাইকেল রাখতে নিষেধ করে এবং বাইরে টিএসসি প্রাঙ্গণে রাখতে বলে। যেহেতু তখন বৃষ্টি হচ্ছিল তাই আমি টিএসসি প্রাঙ্গণে সাইকেল রাখতে অপারগতা প্রকাশ করি। এক পর্যায়ে তারা আমার দিকে তেড়ে আসে এবং মুহতাসিম বিল্লাহ চারুকলা ৪৮ (বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল) আমাকে ধাক্কা দেয়।
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এধরণের আচরণ কোনো ভাবেই কাম্য নয়। আমি এ ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিবো।
কোচিং বাণিজ্যের বিষয়ে চারুকলা বিভাগের সভাপতি ফারহানা তাবাসসুম বলেন, ‘এটা আমাদের বিভাগের বিষয় না তাই এটা নিয়ে আমি কথাও বলতে চাচ্ছি না। যদি এই কথাটা বলে থাকে তবে সে এটা ভুল বলেছে, এবং আমরা এই বিষয়টা দেখবো। আপনি শামীম স্যারের সাথে এটা নিয়ে কথা বলেন।’
চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামীম রেজা বলেন, ‘কোচিংয়ের সাথে বিভাগের কোন সম্পর্ক নেই, আমরা তাদের বলে দিয়েছি এরকম কিছু করলেও ক্যাম্পাস গেটের বাহিরে করতে। যদি তারা বিভাগের নাম ব্যবহার করে অন্যায় করে থাকে তাহলে বিভাগ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ভুক্তভোগীর অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, এঘটনায় ভুক্তভোগী আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি আগামীকাল খতিয়ে দেখবো এবং বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, 'চারুছায়া' বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সামাজিক সংগঠন নয়। টাকার বিনিময়ে কয়েক বছর যাবৎ তারা কোচিং পরিচালনা করে আসছে।