বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ খুঁজুন, মেটাকে ড. ইউনূস
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন | রাষ্ট্র প্রধান / সরকার প্রধান

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, থ্রেডস, মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম পরিচালনাকারী মেটাকে সামাজিক সম্প্রীতি ব্যাহত করে এবং ঘৃণা ছড়ায় এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলায় কার্যকর উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মেটার এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট (পাবলিক পলিসি) সাইমন মিলনার এবং পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রুজান সারওয়ার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ভুল তথ্য একটি বড় সমস্যা। এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। একটি ভুল শব্দই পুরো দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। কেউ কেউ এটা ইচ্ছাকৃতভাবেই করে। মিলনার বলেন, বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলায় বিশেষ করে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে তারা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত এবং তারা বিগত কয়েক দিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ও মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের গত পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশের জন্য একটি নিবেদিত টিম রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মেটা প্ল্যাটফর্ম, বিশেষ করে ফেসবুক, ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি প্রচারের সম্ভাবনা রাখে কিন্তু একইসঙ্গে, যদি তারা নীতিগত মান বজায় না রাখে তবে তারা সম্ভাব্য বিপজ্জনক হতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব মেটাকে তার বাংলা ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান, কারণ মেটা এলএলএম ও এআই ইংরেজি ভাষার ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল, যা সহায়ক নয়। মেটা কর্মকর্তারা আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মঙ্গলবার এক বৈঠক করেন। যেখানে বাংলাদেশ পক্ষ সাম্প্রতিক গবেষণার কথা উল্লেখ করে মেটাকে বাংলা ভাষায় এলএলএম এবং এআই ভিত্তিক অনুভূতি বিশ্লেষণে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানায়। পাশাপাশি ভুয়া খবর এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলায় মানব পর্যালোচকের সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ জানানো হয়। আইসিটি বিভাগ স্থানীয় ভাষা, সংস্কৃতি এবং সংবেদনশীলতা সম্পর্কে গভীর ধারণা সম্পন্ন আরও বাংলাদেশি কন্টেন্ট পর্যালোচক নিয়োগ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তার সম্প্রদায়ের মান প্রয়োগকে শক্তিশালী করার জন্য মেটার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়াও, বাংলাদেশ পক্ষ মেটাকে পরিষেবা দক্ষতা উন্নত করতে, ব্যান্ডউইথ অপ্টিমাইজ করতে এবং ব্যক্তিগতভাবে সনাক্তকরণযোগ্য তথ্য (PII) সুরক্ষিত করার জন্য দেশের অভ্যন্তরে ক্যাশ সার্ভার এবং এজ রাউটার স্থাপন করার অনুরোধ করেছে। মঙ্গলবারের বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ পুলিশ ও বিটিআরসি প্রতিনিধিরা মেটাকে ক্ষতিকর পোস্ট সরানোর প্রক্রিয়ার সময় আরও কমাতে বলেছে, যাতে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।পুলিশ মেটার কাছে হুমকি শনাক্তকরণ, অপরাধ শনাক্তকরণ, গুজব/বিভ্রান্তিকর তথ্যের অ্যালার্ট, জনতাকে সহিংসতায় উসকানির অ্যালার্ট এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংক্রান্ত অ্যালার্ট বিষয়ে আরও সক্রিয় ও দ্রুত সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।