আইডিআরএ’র বড় পদক্ষেপ, ১৫ বীমা কোম্পানির তদন্ত শুরু
প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ১২:৫৫ অপরাহ্ন | অর্থ ও বাণিজ্য

জীবন বীমা কেবল একটি আর্থিক নিরাপত্তার চুক্তি নয়, এটি একজন মানুষের আশা, তার প্রিয়জনের ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জমে থাকা অভিযোগ, অস্বচ্ছতা আর বিলম্বিত দাবি পরিশোধে সেই আস্থার ভিত নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। বছরের পর বছর ধরে কিছু কোম্পানির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দেরিতে দাবি পরিশোধ, এমনকি গ্রাহকের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ জমে উঠছে। স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও বিশ্বাস নিশ্চিত করতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এবার নিয়েছে এক দৃড় পদক্ষেপ।
আইডিআরএ ১৫টি জীবন বীমা কোম্পানির কাছে ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের ব্যাংক হিসাব এবং দাবি পরিশোধের খুঁটিনাটি তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। নির্দেশ স্পষ্ট—সাত কর্মদিবসের মধ্যে সবকিছু জমা দিতে হবে।
চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন আইডিআরএ’র পরিচালক আহম্মদ এহসান উল হান্নান ও সহকারী পরিচালক মো. শামসুল আলম খান। তালিকায় আছে সানলাইফ, হোমল্যান্ড, পদ্মা ইসলামী, প্রগ্রেসিভ, প্রটেক্টিভ ইসলামী, বেস্ট, প্রাইম ইসলামী, যমুনা, ডায়মন্ড, স্বদেশ, সানফ্লাওয়ার, ফারইস্ট ইসলামী, গোল্ডেন, বায়রা এবং এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
এই ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে: ব্যাংকে কী লেনদেন হয়েছে, কে কখন দাবি জমা দিয়েছে, কার দাবির নিষ্পত্তি হয়েছে বা হয়নি—সব তথ্য নির্ভুলভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের ব্যাংক হিসাব, দাবি পরিশোধের তালিকা, গ্রাহকের দাবির পরিমাণ, জমাদানের তারিখ, নিষ্পত্তির তারিখ—সবকিছু জমা দিতে হবে আইডিআরএ-তে। এই তথ্য বিশ্লেষণ করে কোম্পানিগুলোর আর্থিক শৃঙ্খলা, দাবি নিষ্পত্তির সময়সীমা ও সম্ভাব্য অনিয়ম খতিয়ে দেখা হবে।
আইডিআরএ’র হুঁশিয়ারি স্পষ্ট , কেউ যদি তথ্য না দেয়, বা দিলে তাতে অসঙ্গতি পাওয়া যায়, তাহলে লাইসেন্স স্থগিত কিংবা বাতিল পর্যন্ত হতে পারে।
আইডিআরএ’র এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা চাই, যে গ্রাহক কষ্ট করে প্রিমিয়াম দেন, তিনি যেন তার পাওনা সময়মতো পান। এটা শুধু আর্থিক নয়, নৈতিক দায়িত্বও। তাই যারা এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ, তাদের বিরুদ্ধে এবার ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তুত।”